
জাতি গঠনে আদর্শ মা | জাবেদ মুহাম্মাদ |
---|---|
প্রকাশনীঃ | আহসান পাবলিকেশন |
বইয়ের সাইজঃ | ৩-এমবি |
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ | ২০৬ |
বইয়ের ফরম্যাট | পিডিএফ ই-বুক |
বিভাগঃ | পারিবারিক জীবন |
কৃতজ্ঞতায়ঃ | বাগী কুঞ্জালয় পাঠাগার |
কিভাবে মনে সুন্দরের ভুবন বা অনুভূতি সৃষ্টি হবে? —আদর্শিক জ্ঞান, বিবেক-বিবেচনা, আদব-কায়দা, মন-মানসিকতা, মনন, মনীষা, মহত্ত্ব, মনোযোগ, মহব্বত, অনুভূতি, ঔদার্য, আশা, অভিলাষ, অভিপ্রায়, অভিরুচি, অমায়িকতা, অন্তরঙ্গতা, প্রসন্নতা, প্রাণাবেগ, প্রাণবন্ততা, সৌজন্য, সুরুচি, সুধারণা, সুবাসনা, শিষ্টতা, শালীনতা, সদিচ্ছা, সংযম, সহানুভূতি, শ্রদ্ধাবোধ, সহজতা, সজীবতা, সরলতা, সচেতনতা, সমঝোতা, সহমর্মিতা, সত্যবাদিতা, সংবেদনশীলতা, সহৃদয়তা, হৃদ্যতা, স্বতঃস্ফূর্ততা, সততা, স্বকীয়তা, উদারতা, বন্ধু সুলভতা, কৃতজ্ঞতা, সভ্যতা, শ্লীলতাবোধ, দয়া-মায়া, মানবিকতা, বদান্যতা, মহানুভবতা, সহনশীলতা, স্নেহপরায়ণতা ও কল্যাণকামিতা ইত্যাদি। এভাবে মনে যে যত বেশি ভুবন সৃষ্টি করতে পারবেন, যার দৃষ্টিভঙ্গী যতটা স্বচ্ছ ও আদর্শিক ধ্যান-ধারণায় গড়ে তুলতে পারবেন, আপনি উপহার দিতে পারবেন সুন্দর সুন্দর কল্যাণকামী কথা। যার সুফল, সুবাতাস ভোগ করবে গোটা সমাজের লোকজন। ফেলবে স্বস্তির নিশ্বাস। জ্ঞাপন করবে শুকরিয়া, মাথা নত করবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার কাছে, তবেই গড়ে উঠবে সুখী কল্যাণকামী ও সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র।
মা-আদর্শ মা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। আপনার সম্মান-মর্যাদা যেমন অনেক বেশি তেমন আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্যও অনেক বেশি। আপনার সন্তানদেরকে এমন কথা বলা শিক্ষা দিয়ে আপনাকেই গড়তে হবে। সমাধান খুঁজে নিতে হবে আপনাকেও কুরআনের বাণী থেকেই। কী নিয়ে এত অস্থিরতা! এত টেনশন! এত ঝামেলা পোহাচ্ছেন? অসুস্থ হয়ে পড়ছেন? বুকের ব্যথা বাড়ছে! শরীর সরু হয়ে যাচ্ছে! মাথা ঘুরছে। ব্যস্ততা বাড়ছে! কিসের মায়ায়? নামাজ পড়তে পারছেন না, কুরআন অধ্যয়ন করতে পারছেন না, সেদিনের কথা একটু ভাবুন! যেদিন আপনাকে আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। কী দরকার অসুন্দর, অসত্য ও মন্দ কথা বলে নিজের মান-মর্যাদা, সম্মানকে প্রশ্নাতীত করার বরং আমরা আপনাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা এবং রাসূল (সা.) যে আসনে আসীন করার কথা ঘোষণা দিয়েছেন সেখানেই দেখতে চাই। জগতের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক আপনি, শুধু নিজ পরিবার নয় জগত সংসারের জন্যও আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। আপনার মর্যাদা যেমন বেশি তেমনি দায়িত্বও বেশি। আর এ দায়িত্ব পালন শুরু করতে হয় সুন্দর কথা, সুন্দর নির্দেশনা, উপদেশ-আদেশ ইত্যাদির অকিদ প্রদানের মাধ্যমে।
আপনি, তুমি, তুই
বড়দের সাথে কথোপকথনে শ্রদ্ধার নির্দশন স্বরূপ আপনি শব্দটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি মার্জিত, ভদ্র, নম্র ও বিনয়ীভাব প্রকাশ করে থাকে। তুমি শব্দটি সমবয়সী থেকে শুরু করে ছোট শিশুদের সাথে কথোপকথনে ব্যবহার করা যায়, এতেও ভদ্র ভাব প্রকাশিত হতে পারে। কিন্তু তুই শব্দটি তুচ্ছ তাচ্ছিল্য অর্থে ব্যবহার করা হয়। অসম্মান অর্থে ব্যবহার করা হয়। এটি কেউ শুনতে চায় না। এমনকি আপনার ৩/৪/৫ বছর বয়সী ছেলে মেয়েদের সাথে কেউ যদি হঠাৎ করে তুই তুই বলে কথা বলে, আপনি গভীরভাবে ওদের মুখমণ্ডলের দিকে তাকালে দেখবেন কালো ছাপ পড়ে গেছে। সে আত্মসম্মানবোধ ঠিকভাবে না বুঝলেও এটি বুঝে যে তাদের সাথে সুন্দর করে কথা বলা হচ্ছে না, এমন অনেক শুনা যায়, স্যার শিক্ষার্থীদের সাথে তুই শব্দ যোগে কথা বলায় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ প্রকাশ করে বলেছে এই স্যারের কাছে পড়ব না। কারণ, স্যার কথা বলে কেমন যেন বা গাইয়া..... গাইয়া ইত্যাদি। কী অসম্মানজনিত কথা! আপনি ২০/২১ বছর পড়ালেখা করে শিক্ষক হলেন আর ছোট স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা আপনার ভাষা প্রকাশের ভঙ্গী বা স্টাইল নিয়ে অভিযোগ করছে বা অপছন্দ করছে বা বলছে এই স্যার ভাল না, সুন্দর করে কথা বলে না, আদর করে কথা বলে না ইত্যাদি। বলুন! এ অবস্থায় আপনার মর্যাদা কোথায় গিয়ে থামল? জাতি গঠনে আদর্শ মা
Pdf Book নেক আমল বিধ্বংসী বদ আমল সমূহ - মাসুদা সুলতানা রুমী | ডাউনলোড |
---|---|
কুরআন হাদিসের আলোকে শহীদ কারা pdf | ডাউনলোড |
আল কুরআনের আলোকে শিরক ও তওহীদ | ডাউনলোড |
সুন্দর করে কথা বলা হতে পারে আপনার নিজেকে গ্রহণযোগ্য বা নিজের কথাকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার একটি মাধ্যম। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনীষীরা সবাই সুন্দর করে কথা বলতেন। তারা সুভাষী ছিলেন। আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত আদর্শই প্রচারিত
সত্য ও সুন্দর কথা বলা
হয়েছে, তা হয়েছে সুন্দর কথা দিয়ে। কারণ প্রতিটি ভাল কাজই মানুষের মন জয় করে করতে হয়। আর মানুষের মন জয় করার একটি মাধ্যম বা উপায় হলো সত্য ও সুন্দর কথা বলা। সুন্দর কথা শ্রোতার মনে আনন্দের প্লাবন সৃষ্টি করে একদিকে যেমন তার ভেতরের দুঃখ-কষ্ট ও হতাশা গুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, অন্যদিকে তার মধ্যে জন্ম দেয় শক্তিশালী ইতিবাচক এক আবেগ। ফলে পারস্পরিক সুসম্পর্ক গঠনের পাশাপাশি তার প্রতিটি কাজ হয়ে উঠে আনন্দময় স্বতঃস্ফূর্ত স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। আর মন্দ কথা ইতি টেনে আনতে পারে অনেক অতীত ভালবাসা, আদর-সোহাগ ও ভাল লাগার। কাজেই সুভাষী হওয়ার প্রতি আমাদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
ঘুষ ও দুর্নীতি
অন্যায় ও অবৈধভাবে কারো অর্থ-সম্পদ ভক্ষণ করার অন্যতম পন্থা হল ঘুষ। নিয়মবহির্ভূত কোন কাজ করে দেয়ার জন্য বা কোন কার্য সিদ্ধির জন্য কাউকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে যে অর্থ দেয়া হয় তাই ঘুষ। এ সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন:
لَعَنَ اللهُ الرَّشِي وَالْمُرْتَشِى .
"ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের প্রতি আল্লাহ তায়ালার লা'নত।"
জাতির ভাগ্যাকাশে দুর্ভাগ্যের ঘনঘটা, চারিধারে হতাশা আর ঘৃণা, এদেশের মানুষের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে বখশিশ বা খুশী করা (নতুন নামে) ঘুষ ও দুর্নীতি আজ সকল উন্নয়নের চাকাকে স্তিমিত করে দিচ্ছে। জন্ম, বিয়ে, মৃত্যু এ তিনটি কাজ বা অবস্থা আল্লাহর হুকুম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এদেশে একজন মানব শিশুর জন্ম নিবন্ধন করার সময় নিবন্ধনকারী 'শোকর আলহামদুলিল্লাহ বলে এমন খুশীর সংবাদে আমাদেরকে কিছু বখশিশ দেবেন না, মিষ্টি খাওয়াবেন না-একথা বলে থাকেন। ফলে সর্বস্তরের মানুষ জন্ম নিবন্ধন করতে যেতে চায় না। বিয়ে নিবন্ধন রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক আইন যা করতে গেলেও বিয়ের আসরে কাজীর যাওয়া-আসা, খাওয়া-দাওয়াসহ তাদের ভাষায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি দেওয়ার পরও বখশিশ খুঁজে নেওয়ার প্রবণতা সত্যিই লজ্জাকর বিষয়। আর লজ্জা বিষয়টি ঢেকে রাখা ঈমানের অঙ্গ।
এর সাথে মুসলমানিত্বের সম্পর্ক; এভাবে চেয়ে নেওয়াটা ঘুষের সাথেই তুল্য। প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমাদের দেশে মৃত্যু নিবন্ধন এবং বিশেষ প্রয়োজনে সার্টিফিকেট গ্রহণের ক্ষেত্রেও টাকা লওয়া অর্থাৎ আল্লাহ নিয়ন্ত্রিত এ তিনটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ প্রকারান্তরে ঘুষ ও দুর্নীতিরই নামান্তর। (কেহ কেহ হয়তোবা এগুলোতে অতিরিক্ত টাকা নেন না তাদের কথা ভিন্ন) ঘুষ ছাড়া এদেশে কোন কাজই চলে না। অথচ এমন ঘুষ সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে ইরশাদ করেন:
وَلَا تَأْكُلُوا مُوَالَكُمُ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتَدُلُّوبِهَا إِلَى الْحَكَامِ لِتَا كُلُوا فَرِيقًا مِنْ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَانْتُمْ تَعْلَمُونَ -
"তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ গ্রাস করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দাংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।" (সূরা বাকারা: ১৮৮)