মুক্তির পয়গাম Islami Book Free Download

মুক্তির পয়গাম - ইবনে মাসুম PDF book free download
book cover muktir poygam
মুক্তির পয়গাম ইবনে মাসুম
প্রকাশনীঃ আইসিএস পাবলিকেশন
বইয়ের সাইজঃ ১-এমবি
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৭
বইয়ের ফরম্যাট পিডিএফ ই-বুক
বিভাগঃ ইসলাম শিক্ষা
কৃতজ্ঞতায়ঃ বাগী কুঞ্জালয় পাঠাগার

মানুষকে আল্লাহ কি কারণে সৃষ্টি করেছেন? বিভেদ ও বিশৃংখলার জন্যে সৃষ্টি করেছেন? কঠিন ও জটিল এই পৃথিবীতে মানুষকে পথের সন্ধান না দিয়েই ছেড়ে দিয়েছেন? না, কখনই তা হতে পারে না। আল্লাহ তো দয়াময় ও মেহেরবান। যে আল্লাহ বিশাল এই পৃথিবীর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন আমাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দের জন্যে, যে আল্লাহ সব মানুষকে বাঁচিয়ে রেখেছেন আলো, বাতাস আর খাবার দিয়ে সেই আল্লাহই মানুষকে বাতলে দিয়েছেন সরল, শান্তির পথ- সিরাতুল মুস্তাকিম। কোন্ পথে চললে মানুষ পাবে শান্তি, কোন্ পথে আসবে মানুষের মর্যাদা, কোন্ পথে চললে মানুষ তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে তা তিনি সৃষ্টির সাথে সাথেই জানিয়ে দিয়েছেন মানুষকে।

আরও বই ডাউনলোড করুন
ঈদুল ফিতর ঈদুল আযহা - আবদুস শহীদ নাসিম PDF Bangla Book ডাউনলোড
আমার বিয়ের বয়স পার হয়ে গেল বিয়ের জন্য কেউ কখনো চেষ্টা করেনি পড়ুন
Pdf Book নেক আমল বিধ্বংসী বদ আমল সমূহ - মাসুদা সুলতানা রুমী ডাউনলোড

শিখিয়ে দিয়েছেন প্রথম মানুষ হযরত আদম (আ)কে। হযরত আদম (আ) তাঁর গোটা জীবন সেইভাবে চালিয়েছেন। তাঁর পুত্র পরিজনকেও সেইভাবে পরিচালনা করেছেন। তারপর দিন দিন মানুষের সংখ্যা বাড়তে লাগলো। ছড়িয়ে পড়লো মানুষ পৃথিবীর আনাচে-কানাচে আস্তে আস্তে আল্লাহর পথও ভুলে গেল তারা।

রাহমানুর রাহীম আল্লাহ আবার মানুষকে মুক্তির পথ বাতলিয়ে দিতে চাইলেন। তিনি মানুষের মধ্য থেকে বিশেষ কিছু মানুষকে মনোনীত করলেন। এই মনোনীত বান্দারা হলেন নবী ও রাসূল। এবং সেই বাতলিয়ে দেয়া পথের নাম- 'ইসলাম'। আল্লাহর এই মনোনীত বান্দারা তাঁর হুকুম নিজেরা মেনে চলেছেন আর তাদের যুগের সাধারণ মানুষদেরকে দেখিয়ে দিয়েছেন- দেখো, এইভাবে চলো, এইভাবে নিজেদের জীবনকে গড়ে তোল, সমাজকে গড়ে তোল। শুধু মুখে মুখে নয়, কাজের মাধ্যমে তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন আল্লাহর পথ কোনটি। তাই 'ইসলাম' শুধু মাত্র একটি ধর্মের নাম নয়। ইসলাম আল্লাহর মনোনীত শান্তির পথ। এই দুনিয়ায় মানুষের জীবন-যাপনের পথ নির্দেশ। মুক্তির পথ ইসলাম

মানুষের গড়া মতবাদ

আল্লাহর দেখানো এই মুক্তির পথকে বাদ দিয়ে মানুষ নিজে তার চলার পথ রচনার চেষ্টা করেছে বহুবার। কেউ বলেছে এ পৃথিবীর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । এ দুনিয়াটাই সব-দুনিয়ার সুখ শান্তিই সব। অতএব 'খাও দাও ফুর্তি কর।' আর এ জন্যে অন্যকে ঠকিয়ে বড়লোক হওয়া অন্যায় নয়। শ্রমিককে খাটিয়ে তোমার টাকাকে আরো বাড়াও। কিন্তু তাদেরকে ঠকানো কোন ক্ষতি নেই। কে তোমাকে আটকাবে? পরকাল? তা তো নেই।' এই ধরনের চিন্তা বা মতবাদের নাম হলো পুঁজিবাদ । পুঁজিবাদ সমাজে এক দলের ঘাম আর রক্তের বদলে বড়লোক হলো অন্য একদল। বড়লোকেরা আরও বড়লোক হলো গরীবরা হলো আরও গরীব। সমাজের সমস্ত কর্তৃত্ব চলে গেল এইসব লোকের হাতে। পুঁজিবাদ তাই কোন শান্তির দিশা দেখাতে পারলো না মানুষকে ।

এইভাবে দুনিয়ার সব দেশের সব সময়ের মানুষ চেষ্টা করেছে তাদের নিজেদের বুদ্ধি ও ক্ষমতা খাটিয়ে চলার পথ রচনা করতে। কিন্তু বার বার ব্যর্থ হয়েছে। এর প্রকৃত কারণ কি? এর একটি মাত্র কারণ- মানুষ এই মহাসত্যকে বুঝতে পারেনি, যে মানুষের পক্ষে মানুষের জন্যে জীবন পথ রচনা করা সম্ভব নয়। মানুষের সীমিত জ্ঞান, বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা দ্বারা এমন কোন পথ রচনা করা সম্ভব নয় যা সব যুগের, সব দেশের, সকল মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের পথ দেখাতে পারে। কারণ তার আগের লোকদের সে দেখেনি, পরের লোকদের দেখবে না।

দুনিয়ার সবগুলো দেশ আর সমাজ সম্পর্কে তার পুরোপুরি ধারণা থাকা সম্ভব নয়, তাহলে তার পক্ষে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ রচনা করা কি করে সম্ভব হতে পারে? মানুষের কল্যাণের পথতো একমাত্র আল্লাহই দিতে পারেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে তার রহমত দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। যার কাছে মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতা, ভুল-ত্রুটি সবকিছু পরিষ্কার এবং যিনি দুনিয়ার সব সমাজের সকল মানুষকে সম্পূর্ণরূপে জানেন।

ইবাদত

ঈমানের আসল কথা হলো কোন প্রকার সন্দেহ ছাড়াই তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাত এবং কিতাব ইত্যাদির উপর বিশ্বাস আনা। এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে জীবন গড়ে তোলার নাম ইবাদত অর্থাৎ দাসত্ব বা গোলামী করা। মানুষ ও জ্বীন জাতিকে সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হলো তারা আল্লাহর ইবাদত করবে। তাই কোনো অবস্থাতেই মানুষ এই দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারে না। যেহেতু আল্লাহর গোলাম বা দাস হিসাবেই আমাদের জন্ম তাই আমাদের নিজেদের গোটা জীবনটাই তাঁর গোলামী বা দাসত্ব করে কাটিয়ে দেয়া উচিত। এর মানে এ নয় যে দুনিয়ার সব কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে কোথাও বসে 'আল্লাহ' 'আল্লাহ' করতে হবে। বরং ইবাদত করার আসল অর্থ হলো আমরা দুনিয়ায় যে সব কাজ করবো তা আল্লাহর আইন ও নিয়ম অনুযায়ী করবো।

মানুষের জীবনের ঘুম, বিশ্রাম, পানাহার, চলাফেরা, অন্যের সাথে ব্যবহার, টাকা পয়সার লেন-দেন মোটকথা প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী করার নামই ইবাদত। এইভাবে মানুষের জীবন গড়ে তোলার জন্যে প্রাথমিকভাবে কতকগুলো কাজ করতে হয়। যেমন আল্লাহ ও রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন, নামাজ পড়া, রোজা রাখা, জাকাত দেয়া এবং সামর্থ্য থাকলে হজ্ব করা। এগুলো হচ্ছে মুসলমানদের আনুষ্ঠানিক কাজ। এসব কাজ মুসলমানদের উপর ফরজ বা অবশ্যকরণীয় করা হয়েছে যেনো এ সবের মাধ্যমেই তাদের পুরো জীবন আল্লাহর দাসত্বে পরিণত হতে পারে। তাই একজন লোক সারাদিন নামাজ পড়ার পরে রোজার মাসে সারা মাস উপবাস থাকার পরে আর পয়সা খরচ করে হজ্ব করার পরেও যদি তার হৃদয় মনে খোদার ভয়, প্রেম ও ভালবাসা সঠিকভাবে সৃষ্টি না হয় তবে তার নামাজ, রোজা ও হজ্ব পালনের উদ্দেশ্য একেবারে ব্যর্থ হয়েছে বলতে হবে। লোক দেখানো নামাজ, রোজা, হজ্ব ও জাকাতের কোন মূল্য নেই।


শেয়ার করুন