
দাম্পত্য জীবনে সমস্যাবলির ৫০টি সমাধান | আব্দুল হামীদ ফাইযী |
---|---|
প্রকাশনীঃ | পিস পাবলিকেশন |
বইয়ের সাইজঃ | ২-এমবি |
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ | ১৬৩ |
বইয়ের ফরম্যাট | পিডিএফ ই-বুক |
বিভাগঃ | পারিবারিক জীবন |
কৃতজ্ঞতায়ঃ | বাগী কুঞ্জালয় পাঠাগার |
সদ্য বিবাহিত ছেলে-মেয়েদের জন্য অমূল্য উপদেশ
বিয়ের সময় পুত্রের উদ্দেশ্যে পিতার উপদেশ
হে আমার আত্মজ! প্রথমেই আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি এ জন্য যে, তিনি আমার জীবনটাকে এতটুকু প্রলম্বিত করেছেন যে আমি তোমার বিয়ের রাত দেখতে পাচ্ছি। তুমি তোমার পুরুষত্বের পূর্ণতায় পৌঁছেছ। আজ তুমি তোমার দীনের অর্ধেক পূর্ণ করতে যাচ্ছ। হ্যাঁ, এখন তুমি সেই জীবন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছ যেখানে তুমি একটি মুক্ত বিহঙ্গের মতো ছিলে। কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়া যা-ইচ্ছে তা-ই করেছ এতদিন। কোনো চিন্তা ছাড়াই সমুদ্রে গিয়ে লাফিয়ে পড়েছ। সেখান থেকে তুমি যাচ্ছ এখন এক কর্তব্যপরায়ণতা ও পূর্ণতার জগতে।
একজন পিতা সেদিন নিজেকে সুখী মনে করেন, যেদিন তিনি নিজের সন্তানকে পুরুষ হয়ে উঠতে দেখেন। তুমি এক নব্য জগতে এবং এক নতুন জীবনে পা রাখতে যাচ্ছ। তাতে অনেক কল্যাণ ও সৌন্দর্য রয়েছে, সুন্দরভাবে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত করতে পারলে তুমি তা দেখতে পাবে। আবার তাতে অনেক অপ্রিয় ও তিক্ত দিক রয়েছে যা তোমার জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। তাই তোমাকে যথাযথ পরিচালনা ও উত্তরোত্তর উন্নতি করতে শিখতে হবে। আর অবশ্যই তোমাকে জীবন সঙ্গীনি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। তুমি দশটি বিষয়ে লক্ষ্য না রাখলে নিজ ঘরে শাস্তি পাবে না। নিজের স্ত্রীর জন্য তুমি এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবে। অতএব কথাগুলো মনে রেখ এবং এসব অর্জনে সচেষ্ট থেক:
প্রথম বিষয়: স্ত্রীগণ প্রেম ও ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ পছন্দ করে। তারা চায় ভালোবাসার সুস্পষ্ট উচ্চারণ শুনতে চায়। অতএব তোমার স্ত্রীর সাথে এ ব্যাপারে কার্পণ্য দেখাবে না। এ ব্যাপারে যদি কার্পণ্য করো, তবে তুমি তার ও নিজের মধ্যে নির্দয়তার দেয়াল টেনে দিলে। স্বামী-স্ত্রীর নির্মল ভালোবাসার ব্যকরণে ভুল করলে।
ঘরকে আল্লাহর যিকিরের স্থানে পরিণত করা
এ বিষয়ে মহানবী ইরশাদ করেছেন: "যে ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় এবং যে ঘরে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় না, উভয়ের তুলনা জীবিত ও মৃত্যুর সাথে।” (আবু মুসা থেকে সহীহ মুসলিম-১/৫৩৯)
অতএব, জাহেলিয়াতের এ সয়লাবের মোকাবিলায় একজন মুসলিমের ঘরকে আল্লাহকে স্মরণের ঘরে পরিণত করা খুবই দরকারী, আল্লাহর স্মরণ মৃদুস্বরে অথবা নীরবে হতে পারে, সালাত, তিলাওয়াত ও ধর্মীয় জ্ঞান এবং এর বিভিন্ন বিভাগের উপর আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হতে পারে। বহু মুসলমানের ঘর রয়েছে যেখানে আল্লাহর যিকির বা ইবাদত ও স্মরণের ব্যবস্থা না থাকাতে বিদ্যমান হাদীসের আলোকে সেগুলোকে মৃত ঘর আখ্যা দেয়াই যুক্তিযুক্ত। বাস্তবিক পক্ষে ঐ সকল ঘরের অবস্থা আর কিবা হতে পারে?
কাত (zakat book pdf book) - মাওলানা আবদুর রহীম (রহঃ) পিডিএফ ডাউনলোড | ডাউনলোড |
---|---|
ইসলামী দর্শন pdf free download - শিবলী নুমানী | ডাউনলোড |
তাফসীরে তাবারী শরীফ সকল খন্ড পিডিএফ ডাউনলোড! | ডাউনলোড |
যেখানে শোনা যায় শুধুই মিউজিক, গল্প-গুজব এবং গীবত-শেকায়েত? যে ঘরগুলোতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশায় শুধুই ইসলাম বিরোধী আচরণ, নারীরা তাদের গায়রে মুহরিম আত্মীয়দের সাথে সাক্ষাতের ক্ষেত্রে পর্দার ধার ধারে না, প্রতিবেশীদের সাথেও নয়- যারা হর-হামেশা ঘরে প্রবেশ করছে। এ ধরনের ঘরগুলোতে রহমতের ফেরেপ্তাই বা কী করে প্রবেশ করবেন? অতএব খুব জোর দিয়েই এ সুপারিশ করছি যে, আপনার ঘরকে আল্লাহর যিকির তথা আল্লাহর ইবাদতের উপযুক্ত করে গড়ে তুলুন। তাকে শয়তানের আড্ডাখানায় রূপান্তরিত হওয়া থেকে আন্তরিকভাবে রক্ষা করুন।
ঘরে একটি ইসলামী পাঠাগার স্থাপন করা
খুব বড় পাঠাগার না হলেও একটি আদর্শ বুকশেলফ থাকা উচিত যাতে পরিবারের সকলের প্রবেশাধিকার থাকবে। বৈঠকখানা কক্ষে পরিবার প্রধানের কিছু পুস্তক থাকা উচিত যাতে মেহমানবৃন্দ উপকার পেতে পারেন। শোবার ঘরে তাঁর নিজের এবং স্ত্রীর জন্য এবং সন্তানদের ঘরে শিশুতোষ পুস্তক থাকবে, যাতে শিশু এবং বয়স্কদের বিষয়ভিত্তিক সাজানো থাকবে যাতে সহজে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়। একটি আদর্শ বুকশেলফে নিম্নলিখিত পুস্তকাদি থাকবে-
তাফসীর: তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফসীরে ইবনে সা'দী, তাফহীমুল কুরআন, জবদাতুত তাফসীর, ইবনুল কাইউম-এর বাদায়িউত তাফসীর, তাফসীর ফী জিলালিল কুরআন, উসুলুত তাফসীর, আলফাওসুল কাবীর, মায়ারেফুল কুরআন ইত্যাদি।
হাদীস (সুল্লাহ): সহীহ আল-কালিম আত্মাইযিল, আমালুল মুসলিম ফিল ইয়াওমি ওয়াল লাইলি (রাত-দিনের আমল), রিয়াদুস সালেহীন, (সহীহ বুখারী, সহীহ আল মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ, নুখবাতুল ফিকর, বাংলা ভাষায় প্রকাশিত রাহে আমল, ইস্তেখাবে হাদীস, লুলু আল মারজান (বুখারী ও মুসলিম হাদীস সংকলিত) ইত্যাদি।
আকিদা সংক্রান্ত: ফাতহুল মাজীদ শারহ কিতাবুত তাওহীদ, শারহ আকীদাতুত তাহাবীয়া, শারহ আকাইয়্যেদ নাসাফীয়্যা, আশশিরক, ইলমুল কালাম, আল-কালাম। ইত্যাদি।
পারিবারিক ঝগড়া শিশুদের সামনে হওয়া উচিত নয়
এটা একেবারেই দুষ্প্রাপ্য যে পরিবারে ঝগড়া-ঝাটি নেই; এমতাবস্থায় মিমাংসা করে নেয়াটা ভালো উদ্যোগ, সত্যের সাথে থাকে কল্যাণ। তবে শিশুদের সামনে পিতা-মাতার ঝগড়া চালিয়ে যাওয়া ক্ষতিকর। ফলে পরিবারের সদস্যগণ দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। কেউ পিতা, অন্যরা মাতাকে সমর্থন করতে পারে। এমতাবস্থায় দেশের মতো পরিবারে রাজনৈতিক বিভাজন দেখা দিতে পারে এ অবস্থায় শিশুরা সাধারণতঃ মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমন অবস্থার কথা ভাবুন। যেখানে পিতা তার সন্তানকে বলে তোমার মায়ের সঙ্গে কথা বলবে না। আবার মা বলে, তোমার পিতার সঙ্গে কথা বলবে না। অবশ্যই এ অবস্থায় শিশুরা উভয় সংকটে পড়বে এবং বিভক্তির শিকার হবে। পরিবারে এ ধরনের ঝগড়া এড়িয়ে চলা উচিত, যদি ঘটেও তা হলে তা অবশ্যই শিশুদের চোখের আড়ালে ঘটাতে হবে।
শিশুদের সামনে ঝগড়া করলে তাদের মেধার উপর যে কী পরিমাণ চাপ পড়ে তা কল্পনাও করতে পারবেন না আপনি। তাদের মেধা নষ্ট করার প্রধান ক্ষতিকর দায়িত্বশীল হলেন তার পিতা-মাতা, আপনাকে যদি ঝগড়া করতেই হয় তাহলে ছেলে মেয়ে স্কুল বা মাদরাসায় পাঠিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঝগড়া করুন। তাহলে তাদের মেধার কোনো ক্ষতি হবে না। প্লিজ ঝগড়া করবেন না তাহলে রহমত আসবে।