
ইসলামের জীবন চিত্র | নসরুল্লাহ খান আযীয |
---|---|
প্রকাশনীঃ | প্রবাল প্রকাশন লিঃ |
বইয়ের সাইজঃ | ২-এমবি |
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ | ১০৬ |
বইয়ের ফরম্যাট | পিডিএফ ই-বুক |
বিভাগঃ | ইসলামী জীবন ব্যবস্থা |
কৃতজ্ঞতায়ঃ | বাগী কুঞ্জালয় পাঠাগার |
মুমিন ব্যক্তি প্রতিটি কাজই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে করে থাকে। সাফল্য অর্জ'ন করলে সে জন্যে গর্ব করা এবং এ সফলতাকে নিজ চেষ্টা সাধনার ফল মনে করার পরিবর্তে আল্লাহ বারী তায়ালার দরবারে নত হয়ে শুকরিয়। জ্ঞাপন করে।
ইয়ারমুকের যুদ্ধ ইসলামী জেহাদের ইতিহাসে উজ্জল স্থান অধিকার করে আছে। রোমান বাহিনী বিরাট জৌলুস ও শান-শওকতের সাথে ময়দানে হাযির হয়। অপর পক্ষে ত্রিশ হাজার জানবাজ মুজাহিদ বিজয় অথবা শাহাদাতের শপথ নিয়ে পায়ে বেড়ী পরে ময়দানে জংএ হাযির হন, যাতে ময়দান থেকে ভেগে যাবার চিন্তাও মনে না আসে।
হাজার হাজার পাদ্রী আর বিশপ ক্রুশচিহ্ন হাতে নিয়ে ময়দানে হাযির হয়ে যায়। তার। হযরত ঈসা (আঃ) এর নাম নিয়ে সৈন্যদের উৎসাহ দিতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তুমুল যুদ্ধের পর সুসজ্জিত বিরাট রোমান বাহিনী মুজাহিদদের ঈমানী শক্তির মুকাবিলায় ময়দানে টিকে থাকতে পারেনি। সবই বেকার প্রমাণিত হলো। মুজাহিদদের খোদার প্রতি অবিচল আস্থা, ধৈর্য ও দৃঢ়তা রোমান বাহিনীর পায়ের নীচের মাটি সরিয়ে দেয়। যুদ্ধে প্রায় এক লাখ রোমান সৈন্য নিহত হয়। এ বিরাট বিজয়ের সংবাদ আমীরুল মুমিনীন হযরত ওমর ফারুকের কানে পৌঁছলে তিনি সিজদায় পড়ে আল্লার শুকরিয়। আদায় করেন।
খতমে নবুওয়াত
হযরত উমার ইবনে আবদুল আযীয (রাঃ) খেলাফত লাভের পর সর্বপ্রথম যে কাজ করলেন, তা হচ্ছে তিনি জনগণকে একত্রিত করে এক ভাষণ দিলেন। ভাষণে তিনি বললেন-"আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে খেলাফতের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমার হাতে বায়াত করার বাধ্যবাধকতা আমি তোমাদের উপর থেকে প্রত্যাহার করলাম। আমি তোমাদের এ অধিকার দিচ্ছি যে, তোমর। যাকে ইচ্ছা খলীফা নির্বাচিত করে নাও।" কিন্তু উপস্থিত জনত। সমস্বরে বলে উঠলো: আমরা আপনাকেই খলীফা নির্বাচিত করলাম। আপনি আল্লার নাম নিয়ে খেলাফতের কাজ আঞ্জাম দিতে শুরু করুন।" ইসলামের জীবন চিত্র
কুরআন হাদিসের আলোকে শহীদ কারা pdf | ডাউনলোড |
---|---|
ইসলাম মানবতার ধর্ম bangla book pdf | ডাউনলোড |
মন্তব্য সম্বলিত বাইবেল ও কুরআনের আলোকে | ডাউনলোড |
জনগণ সর্বসম্মতভাবে তাঁকে খলীফা নির্বাচিত করার পর তিনি এক দীর্ঘ' ভাষণ দিলেন। ভাষণে তিনি আমীরের আনুগত্য এবং আনুগত্যের দায়িত্ব ও কর্তব্যের উপর আলোকপাত করেন। হামদ ও না'আতের পর তিনি বলেনঃ তোমাদের নবীর পরে আর কোনে। নবী নেই। তাঁর প্রতি যে কিতাব নাষিল হয়েছে, তার পরে আর কোনো কিতাব নাযিল হবেনা। আল্লাহ য। কিছ, হালাল করে দিয়েছেন, তা কিয়ামত পর্যন্ত হালাল থাকবে আর যা কিছ, হারাম করে দিয়েছেন, তাও কিয়ামত পর্যন্ত হারাম থাকবে। আমি নিজের পক্ষ থেকে কোনো ফায়সালা দানের অধিকারী নই। আমি একজন অনুসরণকারী মাত্র। এ অধিকার কারে। নেই যে, সে খোদার নাফরমানী করবে আর তার অনুগত্য করা হবে। আমি তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি নই। সকলের মতই একজন সাধারণ মানুষ। পার্থক্য এতটুকু যে, তোমাদের সকলের তুলনায় ভারী বোঝা আমার ঘাড়ে চাপানো হয়েছে।
নৈতিক চরিত্র ও পারস্পরিক সম্পর্ক
মুসলমান ব্যক্তি যখন কোনো নেক কাজ করে, তা করে শুধ, আল্লার সন্তোষ অর্জনের জন্যে। আমের ইবনে আবদুল্লাহ গাবারী একযুদ্ধে শরীক হন। আল্লাহ তায়ালা সে যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় দান করেন। যুদ্ধে একজন মশহর দুশমনের কন্য। মুসলমানদের হস্তগত হয়। লোকের। মেয়েটির রূপ-সৌন্দর্য ও গুণাগুণ বর্ণনা করলো। প্রশংসা শুনে আমের বললেনঃ "আমিও তো একজন পুরুষ, মেয়েটি আমাকে দিয়ে দাও।" তাঁর দুনিয়া-বিমুখতা ও খোদাভীতির কারণে লোকের। তাঁর এ অস্বাভাবিক আগ্রহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে মেয়েটি তাঁকেই দিয়ে দিলেন। মেয়েটি হস্তগত হবার পর তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন: "আল্লার ওয়াস্তে আমি তোমাকে আযাদ করে দিলাম।" ব্যাপারটি জানতে পেরে লোকেরা বললো: এমন একটি সুন্দরী রূপসীকে আপনি আযাদ করে দিলেন! এর পরিবর্তে অন্য কোনে। দাসীও তো আযাদ করতে পারতেন।"
আল্লার উপর তাওয়াক্কুল
মৃত্যুর পূর্বক্ষণে হযরত উমার ইবনে আবদুল আযীযকে মুসলিমা আরয করলেন:
"আমীরুল মুমিনীন! আপনি আপনার সন্তানদের ধনসম্পদ থেকে বঞ্চিত রেখেছেন আর এমন অবস্থায় এখন তাদের ফেলে যাচ্ছেন যে, তাদের নিকট কিছুই নেই। কতইনা ভালো হতো, আপনার সন্তানদের প্রতি লক্ষ্য রাখার জন্যে যদি আমাকে বা অন্য কাউকেও অসীয়ত করে যেতেন।"
"আমাকে হেলান দিয়ে বসাও।" অত্যন্ত দুর্বল আওয়াযে হযরত উমার ইবনে আবদুল আযীয বললেন।
হেলান দিয়ে বসান হলে পরে তিনি বললেন:
"মুসলিমা! তুমি বলছে। আমি আমার সন্তানদের ধনসম্পদ থেকে বঞ্চিত রেখেছি। খোদার শপথ! আমি তাদের কোনো হক বা অধিকার নষ্ট করিনি। অবশ্য যে সম্পদে তাদের কোন অধিকার ছিলন। তা আমি তাদের দেইনি। অতঃপর তুমি বলেছো, আমি তোমাকে বা খান্দানের অন্য কাউকেও অসীয়ত করে যেতে। তবে শোনো! এ ব্যাপারে আমার অসী ও অভিভাবক এবং কর্মকর্তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, যিনি নেক্কারদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। আমার সন্তানরা যদি খোদাকে ভয় করে, তবে খোদ। অবশ্যই তাদের জন্যে কোনো পথ তৈরী করে দেবেন। আর তারা যদি গুণাহে নিমজ্জিত হয়, তবে আমি তাদেরকে গুণাহের কাজে আরো শক্তিশালী করে যাবো না।